নির্বাচন কমিশনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের প্রধান মাধ্যম হলো নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা হলেও এর কোনো কার্যকর নিজস্ব সচিবালয় নেই, যা আছে তা মূলত প্রশাসনেরই একটি শাখা মাত্র। নির্বাচন কমিশনের সচিবালয়ের প্রধান ব্যক্তি হলেন সচিব। সচিব পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ। নির্বাচন অফিসারদের বদলি পদোন্নতি ও শাস্তির বিষয়গুলোসহ নির্বাচন পরিচালনায়ও সচিবের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে নির্বাহী বিভাগের একজন কর্মকর্তাকে, প্রধানত প্রশাসন ক্যাডার থেকে, নিয়োগ দেয়া হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সচিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়। আর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হলো, প্রশাসন ক্যাডার পরিচালিত একটি মন্ত্রণালয় যা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে। কাজেই নির্বাহী বিভাগের একজন কর্মকর্তার পক্ষে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব এড়িয়ে নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করা প্রায় অসম্ভব।

ঢাকার কলেজগুলোয় একসময় বাংলাদেশের সেরা শিক্ষকরা পদায়ন পেতেন। মেধাবী, গবেষণামুখী ও অভিজ্ঞ শিক্ষকরা রাজধানীর কলেজগুলোকে প্রাণবন্ত করে তুলেছিলেন। আমরা যখন এ খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুরবস্থা দেখি, তখন বোঝা যায়-এটি কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়; বরং দীর্ঘদিনের নীতিগত ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফল। ঢাকার বড় কলেজগুলোতে এখনো দেশের সেরা শিক্ষার্থীরাই ভর্তি হয়। সুতরাং ফলাফলের অবনতি ও শিক্ষার মানের জন্য শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই দায়ী নয়।

জুলাই অভ্যুত্থান ঘটেছিল নেগেটিভিটির উপর ভিত্তি করে। আমি এর নাম দিয়েছি ‘না-তত্ত্ব’। জুলাই অভ্যুত্থানের সকল শক্তির ঐকমত্য ছিল একটি বিষয়ে। তা হলো, ‘শেখ হাসিনাকে চাই না’। অর্থাৎ, ‘না-তত্ত্বের’ ওপর ভিত্তি করে জুলাই অভ্যুত্থান গড়ে উঠেছিল। কিন্তু এর পরিবর্তে ‘কি চাই’ সেই বিষয়ে বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে কোনো ঐক্য গড়ে উঠেনি। ‘না-তত্ত্বের’ বিপরীতে ‘হ্যাঁ তত্ত্বের’ জন্য একটি দেশে যে পরিমাণ চিন্তা ও দার্শনিক প্রস্তুতি দরকার হয় এই আন্দোলনের পেছনে তা ছিল না। উপরন্তু ‘না-তত্ত্বে’ যারা একমত ছিলেন তাদের মধ্যেকার মতাদর্শিক ভিন্নতা এতো প্রবল তাদের মধ্যে কোনো রকম স্থায়ী ঐক্য গড়ে ওঠার প্রায় অসম্ভব। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে জুলাই অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে একটি চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হবে এটাই স্বাভাবিক। সরকার ‘ঐকমত্য কমিশন’ এর মাধ্যমে অভ্যুত্থানের পেছনের দার্শনিক শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিবদমান দলগুলো বহুমুখী ভিন্নতা এবং ‘ঐকমত্য কমিশন’ এর অদূরদর্শীতার ফলে সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হতে বাধ্য। ঐকমত্য কমিশনের বড়ো ব্যর্থতা হলো জুলাই আন্দোলনের চরিত্র ধরতে না পারা। ঐকমত্য কমিশন ‘হ্যাঁ-তত্ত্বে’ উপর ঐকমত্য আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ঐকমত্য হতে হবে জুলাই অভ্যুত্থানের চরিত্র মেনেই। কাজেই ‘হ্যাঁ-তত্ত্বে’ বিপরীতে ‘না-তত্ত্ব�

রাষ্ট্রের জন্য একটি জনবান্ধব আমলাতন্ত্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে ডিপিসি ও এসএসবি বিলুপ্ত করে নতুন পদোন্নতি পদ্ধতি চালু করতে হবে। পদোন্নতির সামগ্রিক প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, দক্ষতানির্ভর ও বিজ্ঞানসম্মত করে তুলতে হবে। এজন্য পদোন্নতি প্রক্রিয়ার সঙ্গে পিএসসিকে যুক্ত করতে হবে। পিএসসি নির্ধারিত সময়ে পঞ্চম গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতির ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল, চাকরির পারফরম্যান্স এবং উদ্ভাবনী দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে নম্বর বণ্টনের মাধ্যমে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। পদোন্নতি বোর্ডে পেশাভিত্তিক বৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে হবে। আর অবশ্যই উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য বিদ্যমান ৭৫ শতাংশ কোটা বিলুপ্ত করে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে উপসচিব নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। এবং উপসচিব পদে পার্শ্বপ্রবেশের ব্যবস্থা রাখতে হবে। উপসচিবের ঊর্ধ্বতন পদে নিয়াগ ও পদোন্নতির জন্য মেরিট ম্যাট্রিক্স প্রথা চালু করতে হবে। একজন কর্মকর্তার পারফরম্যান্স রিপোর্ট ও কাজের অভিজ্ঞতা, উদ্ভাবনী দক্ষতা, প্রশিক্ষণ, উচ্চতর শিক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বরের সমন্বয়ে এ মেরিট ম্যাট্রিক্স চালু করতে হবে।

যদি সত্যিকারের ‘জুলাই অভ্যুত্থান’কে একটি যথার্থ বিপ্লবে রূপ দিতে হয়, ভবিষ্যতের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার মূলোৎপাটন করতে হয়, তবে এনবিআরের পৃথকীকরণ যতটা গুরুত্বপূর্ণ, প্রশাসনের নীতি ও বাস্তবায়ন কর্তৃত্বের পৃথকীকরণ তার চেয়েও বেশি জরুরি। বিশেষ করে উপসচিব পদে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে—এটাই হওয়া উচিত সরকারের সংস্কার কর্মসূচির এক নম্বর অগ্রাধিকার। অথচ সরকার তা না করে তুলনামূলক গৌণ ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসায় অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন। আর এনবিআরের কর্মকর্তারাও বিষয়টিকে দেখছেন বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে।

বিজ্ঞানের সংজ্ঞা নিয়ে আমাদের সমাজে স্কুল জীবন থেকেই এক ধরনের বিভ্রান্তি লক্ষ্য করা যায়। এই বিভ্রান্তি ইচ্ছাকৃত, না কি অজ্ঞতাজনিত নাকি কোনো সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতÑতা নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন। তবে এটি যে বিজ্ঞান সম্পর্কে আমাদের জানাশোনাকে বিপথগামী ও বিভ্রান্ত করেছে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। বিজ্ঞানের সংজ্ঞা বলতে গিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো হয়, ‘বিজ্ঞান’ মানে ‘বিশেষ জ্ঞান’। আর এই সংজ্ঞাটিকে আরো দৃঢ়ভাবে শিশুদের মস্তিস্কে ঢুকিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয় ‘বি’ মানে ‘বিশেষ’ আর জ্ঞানতো জ্ঞানই। কাজেই বিজ্ঞান মানে বিশেষ জ্ঞন। সংজ্ঞার এই ‘বিশেষ’ শব্দটি আমাদের ভুল পথে পরিচালিত করছে এমন দাবী করলে তা ভুল হবে না। কারণ, কোনো কিছু ‘বিশেষ’ হওয়া মানেই তা ‘বৈজ্ঞানিক’ বা ‘সত্যভিত্তিক’ হবে- এমনটি নয়। যেমন, জাদুবিদ্যাও একটি ‘বিশেষ’ বিদ্যা, যার কিছু নির্দিষ্ট কৌশল রয়েছে। কিন্তু সেই কৌশল কোনোভাবেই পরীক্ষণযোগ্য, প্রমাণযোগ্য বা যুক্তিনির্ভর নয় -ফলে জাদুবিদ্যাকে কখনোই বিজ্ঞান বলা যায় না। জাদুবিদ্যার মতো এমন বিষয়কে যেমন ‘বিশেষ জ্ঞান’ বিবেচনায় নিয়ে হেয়জ্ঞান করা হয়Ñসঙ্গত কারণেই বিজ্ঞানকেও একইভাবে হেয়জ্ঞান করা হয়। কাজেই বিজ্ঞানকে বুঝতে হলে সবার আগে আমাদের ‘বিজ্ঞান মানে বিশেষ জ্ঞান’-এই ভুল ধারণা পরিহার করতে হবে। এই ভুল ধারণার পরিবর্ত

আমাদের শাহজাহান স্যার একজন সত্যিকারের দরদী মানুষ। তাঁর কথা ও আচরণে মানুষের প্রতি যে মমত্ববোধ ও ভালোবাসা ফুঁটে ওঠে, তা আজকের দিনে সত্যিই বিরল। এটা ভাবতেও ভালো লাহে যে এমন একজন গুণী ও হৃদয়বান মানুষকে আমরা সহকর্মী হিসেবে পেয়েছিলাম। তবে আমরা অনেকেই তাঁকে কেবল সহকর্মী হিসেবে দেখিনি, দেখেছি শিক্ষক হিসেবে। তিনি ছিলেন আমাদের শিক্ষকপ্রতিম সহকর্মী, যিনি নীরবে আমাদের পথ দেখাতেন, কাজের প্রেরণা জোগাতেন।[লেখাটি ২/৬/২০২৫ সাপ্তাহিক মুন্সীগঞ্জ সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে]

সারমর্ম আমলাতন্ত্র হলো প্রশাসনিক অবকাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এটি পেশাদারিত্ব, নিয়মতান্ত্রিকতা ও কাঠামোগত শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে কাজ করে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রশাসনিক অবকাঠামোতে সামগ্রিকভাবে একটি ভারসাম্যহীন কর্তৃত্ববাদী শ্রেণি গড়ে উঠেছে—যা একদিকে প্রবল নৈতিক সংকট তৈরি করছে, অন্যদিকে জাতীয় উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই প্রবন্ধে বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের ঐতিহাসিক ক্রমবিকাশ, বিদ্যমান প্রশাসনিক কাঠামো এবং তা থেকে উদ্ভুত নৈতিক সংকটের বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই সংকট কীভাবে সামগ্রিক উন্নয়ন, সামাজিক গঠন ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতিকে প্রভাবিত করছে তাও আলোচিত হয়েছে। সবশেষে আমলাতন্ত্রের সনাতনী ওয়েবারিয়ান ধারণার পরিবর্তে আধুনিক গতিশীল নতুন জন-ব্যবস্থাপনার (ঘবি চঁনষরপ গধহধমবসবহঃ) আলোকে গণমুখী, ভারসাম্যপূর্ণ এবং উন্নয়ন সহায়ক আমলাতন্ত্রের সম্ভাব্য রূপরেখা খুঁজে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে যার মূল লক্ষ্যই হবে রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা। [৩০ মে ২০২৫, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের নৈতিক উন্নয়ন কেন্দ্র আয়োজিত প্রশাসনিক নীতিবিদ্যা শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধ]

ভাইভার মূল্যায়ন পদ্ধতিরও পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমানে ব্যক্তিনির্ভর ভাইভা পদ্ধতির পরিবর্তে একে কাঠামোগত পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে হবে। এজন্য ১০০ নম্বরের ভাইভাকে পাঁচটি পৃথক ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে হবে। এ পাঁচটি ক্যাটাগরি হলো: যোগাযোগ ও আন্তর্ব্যক্তিক দক্ষতা; স্মার্টনেস ও উপস্থিত বুদ্ধি; নীতিবোধ ও মনস্তত্ত্ব; পলিসি সচেতনতা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা; যুক্তি, নেতৃত্ব ও সমস্যা সমাধান দক্ষতা। প্রত্যেক ক্যাটাগরির নম্বর হবে ২০। পাঁচটি ক্যাটাগরিতে মোট নম্বর হবে ১০০। এবার বোর্ডের প্রত্যেক সদস্যকে পৃথক এক-একটি দিক মূল্যায়নের জন্য নির্ধারণ করতে হবে। এভাবে বোর্ডের প্রত্যেক সদস্যকে এক-একটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির দায়িত্ব দিলে মূল্যায়ন হবে অধিকতর সুনির্দিষ্ট ও পক্ষপাতমুক্ত। প্রার্থীর জন্যও এ প্রক্রিয়া হবে বৈচিত্র্যময় এবং এর মাধ্যমে একজন প্রার্থীর সামগ্রিক যোগ্যতা বিচারও সম্ভব হবে। ফলে পুরো ভাইভাটিই হয়ে উঠবে অনেক বেশি স্বচ্ছ, যুগোপযোগী, বিজ্ঞানসম্মত ও গ্রহণযোগ্য। ভাইভা বোর্ডে কোনো সাইকোলজিস্ট বা মনোবিজ্ঞানী থাকে না। ফলে প্রার্থীর মানসিক সক্ষমতা মূল্যায়নের কোনো সুযোগ থাকে না। কাজেই ভাইভায় প্রার্থীর মনস্তত্ত্ব ও মানসিক দক্ষতা পরীক্ষা করার জন্য বোর্ডে একজন সাইকোলজিস্ট রাখতে হবে। বর্তমানে পিএসসির ভাইভা একটি এককালীন ও একমুখী উপায় হি

সিলেবাস একটি টেকনিক্যাল বিষয় এবং তা সম্পূর্ণরূপেই একটি ফলাফলভিত্তিক বিষয়। অর্থাৎ কোনো পরীক্ষা বা কোর্সের সিলেবাস কেমন হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে নির্ভর করে এ পরীক্ষা বা কোর্সের মাধ্যমে আমরা কী অর্জন করতে চাই তার ওপর। এটা কেবল বিসিএস পরীক্ষার জন্যই সত্য নয়, যেকোনো একাডেমিক কোর্সের জন্যও সত্য। ডাক্তারি কোর্সের সিলেবাস যেমন হবে, কম্পিউটার প্রকৌশল কোর্সের সিলেবাস তার থেকে অবশ্যই ভিন্নতর হবে। সংগত কারণেই পাবলিক সার্ভিস পরীক্ষার সিলেবাস কেমন হবে তা নির্ভর করবে আমরা কেমন পাবলিক সার্ভেন্ট চাই তার ওপর। একই সঙ্গে আমাদের জেনে নেয়া দরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় আমাদের কেমন পাবলিক সার্ভেন্ট দরকার?

কমিশন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে মামলা গ্রহণের ক্ষমতা প্রদানের সুপারিশ করেছে এবং তারা উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি ও ফৌজদারি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পুনঃস্থাপনেরও সুপারিশ করেছে। যদিও তারা এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ গ্রহণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে। এটা যেন তাদের ঔদার্য। অথচ ম্যাজিস্ট্রেসি বা বিচারিক কার্যক্ষমতা প্রয়োগের একমাত্র দায়িত্ব হলো বিচার বিভাগের। সরকার এ লক্ষ্যে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে। কিন্তু জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এক্ষেত্রে তাদের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে বিচার বিভাগের আওতাভুক্ত বিষয়ে সুপারিশ করেছে। এমন এখতিয়ার-বহির্ভূত সুপারিশ লক্ষ করা যায় দুর্নীতি দমনবিষয়ক কমিশনসহ আরো অনেক বিষয়েও।

'বাঙালীর চিন্তার সংকট থেকেই সকল সমস্যার উদ্ভব। এমনকি বাঙালীল এই চিন্তাশক্তির দুর্বলতার কারণেই রাষ্ট্র সম্পর্কেও আমাদের ধারণা স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি। রাষ্ট্র কি? রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের করণীয় কি? আধুনিক সমাজব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সাথে নাগরিকের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত? - এই নিয়ে আমাদের ধারণা স্পষ্ট না হলে রাষ্ট্র বিনির্মাণে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করা অসম্ভব হয়ে উঠবে।' [১২/২/২০২৫ মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। বক্তৃতাটি ইকতিজা আহসান সম্পাদিত মাসিক বিবিধ পত্রিকার ১৫তম বর্ষের ৮৭তম সংখ্যা, মার্চ ২০২৫ এ প্রকাশিত হয়েছে।]

সারমর্ম: তবে ওমর খৈয়াম ছিলেন মূলত একজন বিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিদ এবং গণিতবিদ হিসেবে। অবসর সময়ে তিনি কবিতা রচনা করতেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে তাঁর গণিতবিদ পরিচয় প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। এই প্রবন্ধে আমরা ওমর খৈয়ামের গণিত প্রতিভা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। তাঁর গণিতের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানবো এবং একই সাথে জানবো গণিতে তাঁর উত্তরসুরী সম্পর্কেও। মুখ্যশব্দগুচ্ছ: ‘আল জাবর ওয়াল মুক্বাবালা, ত্রিঘাতী সমীকরণ, ইউক্লিড, এলিমেন্টস, ত্রিঘাতী সমীকরণ, দ্বিপদী উপপাদ্য। [প্রবন্ধটি গণিত ফোরাম খুলনা থেকে প্রকাশিত গণিতপত্র এর ১০ম সংখ্যায় প্রকাশিত]

ওমর খৈয়াম পারস্যের কবি, দার্শনিক ও বিজ্ঞানী। তিনি ইসলাম ধর্মের অনুসারী হলেও, সমসাময়িক কালে তাঁর দর্শন ও ধর্মবিশ্বাস নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। তাঁর বিভিন্ন রুবাইয়ে ইসলাম ধর্মের নানা আচার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, খোদার প্রতি নানা অভিমান অভিযোগ জানিয়েছেন। আর গোঁড়া মুসলমানরা এইগুলোকেই তাদের অভিযোগের ভিত্তি হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। একটি রুবাইয়ে ওমর খৈয়াম বলেন: ‘আমায় সৃজন করার দিনে জানত খোদা বেশ করেই, ভাবীকালের কর্ম আমার, বলতে পারত মুহূর্তেই। আমি যে সব পাপ করি-তা ললাট-লেখা, তাঁর নির্দেশ, সেই সে পাপের শাস্তি নরক- কে বলবে ন্যায় বিচার এই!’ - কাজী নজরুল ইসলাম এর অনুবাদ জীবদ্দশায় তাঁকে ধর্মদ্রোহী, নাস্তিক, কাফের ইত্যাদি নানান উপাধি দেয়া হয়েছিল। তাঁর ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছিল। তাঁর জীবনকে বিপর্যস্ত করে ফেলা হয়েছিল। এমনকি মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য তাঁর প্রতিষ্ঠিত মানমন্দিরটিও ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। ধর্মের নামেই এসব করা হয়েছিল। সুনির্দিষ্টভাবে বললে বলা যায় মুসলমানরাই তা করেছিল। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে তিনি কি তবে মুসলিম ছিলেন না? নাকি তিনি অন্য কোনো ধর্মের অনুসারী ছিলেন? তিনি যদি অন্য কোনো ধর্মমতের অনুসারী হয়ে থাকেন তাহলে সেই ধর্মমতের বৈশিষ্ট্য কী? কেউ তাঁকে নাস্তিক বলেন, কেউ বলেন সুফি, কেই তাঁকে এপিকিউরিয়ান বলেন, আবার কেউ তা�

এ টি এম শামসুল হক কমিশনের নেতৃত্বে গঠিত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ২০০০ সালে সরকারের কাছে যে রিপোর্ট জমা দেয়, তাতেও পার্শ্বপ্রবেশের সুপারিশ করা হয়েছে। তারা সচিব পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পদগুলোতে ১০ শতাংশ পার্শ্বপ্রবেশের ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। কিন্তু আমলাতন্ত্রের প্রবল আপত্তির মুখে এই যুগান্তকারী সংস্কারটি হয়ে ওঠেনি। এখন সময় এসেছে প্রয়োজনীয় এই সংস্কারকাজটি করে নেওয়ার।

আমার প্রিয় দুইজন শিক্ষকের একজন নজমুল হুসেন আকাশ স্যার। আমরা তাঁকে আকাশ স্যার বলেই ডাকতাম। অসম্ভবম পরিশ্রমী, সাহসী, প্রতিবাদী একজন মানুষ ছিলেন তিনি। স্যার ছিলেন আমাদের সময়ের নায়ক। আমার মতো অনেকেই তখন স্যারের মতো হতে চাইত। স্যারকে আমরা ভালোবাসতাম, শ্রদ্ধা করতাম, আবার ভয়ও পেতাম। স্যার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষই। কিন্তু তাঁকে ভয় পেতাম কেন তা জানি না। তবে ভয় পেতাম এটা সত্যি। স্যার আমাদের বাংলা পড়াতেন। একবার লালসালুর নাট্যরূপ করেছিলেন তিনি। সেই নাটকটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে মঞ্চায়নও হয়েছিল যতদূর মনে পড়ে। সম্পূর্ণ অবহেলিত একটি গ্রামের মোটামুটি অখ্যাত একটি কলেজে চাকুরি করেও স্যার আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন আকাশ ছোঁয়ার। বরিশাল থেকে প্রকাশিত মতবাদ সাময়িকীতে ১০ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত

আমলাতন্ত্র তথা প্রশাসন ক্যাডারের প্রধানতম বৈশিষ্ট্যই হলো ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা। যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই তারা নিজেদের স্বার্থটি সবার আগে আদায় করে নিতে পারে। সব অবস্থায় তারা নিজেদের সুযোগ-সুবিধা ও ক্ষমতা বৃদ্ধি করিয়ে নিতে পারে। দু-একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হতে বাধ্য। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের সামরিক শাসনকে হটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালু হয়। বিএনপির নেতৃত্বে সবে একটি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। সরকার তাদের দায়িত্ব, কর্তব্য এবং আমলাতন্ত্রের ভেতরকার খুঁটিনাটি বিষয় বুঝে ওঠার আগেই প্রশাসন ক্যাডার নিজেদের স্বার্থে সরকারকে দিয়ে একটি ক্যাডারকে বিলুপ্ত করে দিতে সক্ষম হয়। এই ক্যাডারটির নাম সচিবালয় ক্যাডার।

জনপ্রশাসন সংস্কারের আড়ালে কেউ যাতে সরকার বিরোধীতাকে উসকে দিতে না পারে সেদিকে সূক্ষ্ম নজর রাখা দরকার বলে মনে করি। একই সাথে বৃহত্তর সিভিল সার্ভিস কাঠামোকে ব্যাহত না করে এই দুটি পেশার অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে এদের জনবান্ধব পেশায় পরিণত করা দরকার বলে মনে করি।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ফেলেছে সবার অগোচরে। আগে যার নাম ছিল সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, আওয়ামী লীগ সরকার সম্পূর্ণ অন্যায্যভাবে মন্ত্রণালয়টির নাম পরিবর্তন করেছে। তারা এর নতুন নাম রেখেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের এই নাম পরিবর্তনের বিষয়টি নির্দোষ ছিল না। এর পেছনে ছিল মারাত্মক ষড়যন্ত্র ও দুরভিসন্ধি। সেই ষড়যন্ত্র ও দুরভিসন্ধি বুঝতে হলে প্রথমে মন্ত্রণালয়টির দায়িত্ব, কার্যক্রম, এখতিয়ার ও কাজের পরিধি সম্পর্কে জানতে হবে। [পুরো লেখার জন্য পড়ুন]

এই প্রবন্ধে ওমর খৈয়ামের কবিতার সুলুক সন্ধান করা হয়েছে। রয়েছে ওমর খৈয়ামের কবিতার বৈশিষ্ট্য এবং প্রকারভেদও। কেন ওমর খৈয়ামের কবিতার তাঁর জীবদ্দশায় খুব একটা প্রচার পায়নি তার বিবরণও রয়েছে। সর্বোপরি ওমর খৈয়ামের মৃত্যুর পরে তাঁর কবিতা বিশ্বব্যাপী কেন এবং কিভাবে সমাদৃত হয়েছে সেই রহস্যও ভেদ করা হয়েছে।

পিএসসিকে পাশ কাটিয়ে সাধারণ মানুষের অগোচরে জন-আকাঙ্ক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীতে আমলাতন্ত্রের উপসচিব (ডিএস) পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে চরম নৈরাজ্যকর একটি পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগের জন্য একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) নামের একটি বোর্ডকে। এই বোর্ড ভয়ংকর বৈষম্যমূলক এক কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে উপসচিব পদে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে। বর্তমানে উপসচিব নিয়োগের ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ পদ কেবল প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়।

আমলাতন্ত্রে পদোন্নতি নিয়ে যত ঝামেলা, যত বিতর্ক সবই ষষ্ঠ গ্রেড এবং তার ঊর্ধ্বতর স্তর থেকে শুরু। এর কারণ কী? এর কারণ হলো পরবর্তী ধাপের অস্বচ্ছ এবং বিতর্কিত পদোন্নতির প্রক্রিয়া। ‘উচ্চতর সরকারি পদ’ বাদে রাষ্ট্রের ষষ্ঠ গ্রেডের পরবর্তী সব ধাপে পদোন্নতির জন্য একটি বোর্ড তৈরি করা হয়। এই বোর্ডকে বলা হয় ‘বিভাগীয় পদোন্নতি বোর্ড’। এই বোর্ডের একটি কমিটি থাকে, যাকে সংক্ষেপে ‘ডিপিসি’ বলা হয়। এই কমিটি অত্যন্ত ক্ষমতাশালী একটি কমিটি। কারণ এই কমিটি ষষ্ঠ থেকে চতুর্থ গ্রেডের ক্যাডারভুক্ত ও ক্যাডারবহির্ভূত কর্মচারীদের পদোন্নতি দিয়ে থাকে। এই কমিটির সদস্য চারজন। তাঁরা হলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত বা যুগ্ম সচিব, অর্থ বিভাগের একজন অতিরিক্ত বা যুগ্ম সচিব এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থার প্রধান। সমস্যাটি এখানেই। কেন?

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেওয়ার মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় ১১৭ জনকে উপসচিব, ১০ দিনের মাথায় ২০১ জনকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এর মাত্র দুই দিনের মধ্যে আরো ২২ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৫ আগস্ট ১৩১ জনকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। যুগ্ম সচিব পদটি পে স্কেলের তৃতীয় ধাপের একটি পদ, অতিরিক্ত সচিব দ্বিতীয় গ্রেডের পদ। সর্বশেষ পদোন্নতি তালিকা অনুযায়ী প্রশাসন ক্যাডারের ২২তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তাদের তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, অথচ অন্য অনেক ক্যাডারে ১৬ থেকে ২২ বিসিএসের সদস্যরা এখনো পঞ্চম গ্রেডে অবস্থান করছেন। এসব চাকরিজীবী দীর্ঘদিন ধরে বেতন স্কেলের সর্বশেষ ধাপে থাকায় বার্ষিক ইনক্রিমেন্টও বন্ধ হয়ে আছে। মূল্যস্ফীতির এই দিনে এতে মূলত তাঁদের বেতনের আর্থিক মান কমে যাচ্ছে। কাজেই ন্যায়বিচারের তত্ত্ব অনুযায়ী সরকারের এই আচরণ সামগ্রিক প্রত্যাশা থেকে ভিন্নতর এবং হতাশাব্যঞ্জকও। সরকারের আচরণ যেন তেলে মাথায় তেল দেওয়ার মতোই।

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সবচাইতে স্মরণীয় ঘটনা এবং মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান–এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। মুক্তিযোদ্ধারা চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, চাকরিতে কোটা পদ্ধতির প্রবর্তন সেই চেতনাবিরোধী। বিষয়টি খোলাসা করা দরকার। বস্তুত মুক্তিযুদ্ধ কেন হয়েছে, সেই প্রশ্নের মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিহিত। মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের অপশাসন ও নিবর্তনমূলক আচরণের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বহুবিধ নিবর্তনমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পূর্ব বাংলার জনগণ দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছিল। কিন্তু ১৯৭০ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে।

পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় গণিতবিদের নাম পিথাগোরাস। বিশ^ব্যাপী তাঁর এই ব্যাপক পরিচিতির প্রধানতম কারণ হলো জ্যামিতির একটি উপপাদ্য। এই উপপাদ্যটি পিথাগোরাসের উপপাদ্য নামে পরিচিত। এই উপপাদ্যের মাধ্যমে সমকোণী ত্রিভুজের বাহুগুলোর মধ্যে নিবিঢ় সম্পর্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্পর্কটি হলো, ‘কোনো সমকোণী ত্রিভুজের অতিভুজের বর্গ অন্য দুই বাহুর বর্গের যোগফলের সমান।’ এই সম্পর্ককে একটি সাধারণ সমীকরণের মাধ্যমেও প্রকাশ করা যায়। একটি সমকোণী ত্রিভুজে অতিভুজের দৈর্ঘ্য প একক এবং অন্য দুই বাহুর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ধ ও ন একক হলে এদের সম্পর্ক হবে প^২=ধ^২+ন^২। সম্পর্কটি খুব সহজ এবং সরল। কিন্তু গণিতের ইতিহাসে এর গুরুত্ব এবং তাৎপর্য অসাধারণ। গত প্রায় আড়াই হাজার বছরের অধিক সময়েও এই সূত্রটি গণিতের শিক্ষার্থীরা পড়ে আসছে। সারা পৃথিবীর অগণিত মানুষ নানান কারণে নানান ভাবে এই উপপাদ্যটি ব্যবহার করে আসছে। সঙ্গত কারণেই বলা হয়, ‘আজ পর্যন্ত পিথাগোরাসের উপপাদ্যটি একক কোনো উপপাদ্য হিসেবে গণিতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপপাদ্য হিসেবে বিবেচিত।’ ২০০৪ সালে পরিচালিত এক জরিপে এই উপপাদ্যটিকে পৃথিবীর বিখ্যাততম গাণিতিক সূত্রের অন্যতম একটি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু মজার বিষয় হলো যে উপপাদ্যটির ক্রেডিট পিথাগোরাসকে দেয়া হয়, সেই উপপাদ্যটি পিথাগোরাসের জন্মের অনেক আ�

‘ডিম আগে না মুরগী আগে’ এই বিতর্ক কম-বেশি সকলেরই শোনা। এই বিতর্ক কে, কবে, কখন, কোথা থেকে শুরু করেছেন তা সঠিকভাবে যায় না। তবে প্রাচীন কাল থেকেই দেশে দেশে এই বিতর্ক চালু ছিল। ধারণা করা হয় প্লুটার্ক (৪৬-১২০খ্রি.) নামের এক রোমান ইতিহাসবিদ সবার আগে এ বিতর্কটিকে বইয়ের পাতায় লিখে রাখেন। প্লুটার্ক ছিলেন একাধারে একজন ইতিহাসবিদ, জীবনীকার ও লেখক। প্লুটার্ক এই বিতর্কের কথা লিখে রাখলেও এর উদ্ভাবন প্লুটার্কের হাত ধরে হয় নি। কারণ প্লুটার্কের জন্মের অনেক আগে থেকেই এই বিতর্ক প্রচলিত ছিল।

এ বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুর দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই হবে বলে জানিয়েছে। ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে নির্বাচনী তপশিল ঘোষণা করা হবে এর অন্তত মাসখানেক আগে। অর্থাৎ নভেম্বরে। এখন চলছে সেপ্টেম্বর মাস। আসন্ন নির্বাচনকে ‘সফল’ করে তোলার জন্য নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছে বলে মনে হচ্ছে। সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আবেগ, উচ্ছ্বাস, উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

সারসংক্ষেপ অয়লার সমীকরণটি গণিতের সুন্দরতম সমীকরণ হিসেবে খ্যাতিলাভ করেছে। এই সমীকরণটি গণিতবিদ এবং পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রায় সমান জনপ্রিয়। কিন্তু কেন এই সমীকরণটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে? কী আছে এতে? এই প্রবন্ধে গণিতের এই সুন্দরতম সমীকরণটির নিবিড় ময়নাতদন্ত করা হবে। একই সাথে এই সমীকরণটির উদ্ভব এবং বিকাশের ইতিবৃত্ত অনুসন্ধান করা হবে; এবং সবশেষে গণিত এবং বিজ্ঞানে এর প্রভাবইবা কতটুকু তা জানার চেষ্টা করা হবে। বাংলা একাডেমি বিজ্ঞান পত্রিকা।নবপর্যায় বর্ষ ৫। সংখ্যা ১। জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৩

জগদীশচন্দ্র বসুকে নিয়ে আমাদের সমাজে বেশ কিছু মিথ প্রচলিত আছে। সাধারণ মানুষতো বটেই, একশ্রেণির শিক্ষিত মানুষও এই মিথগুলো সরলমনে বিশ্বাস করেন। এই প্রবন্ধের প্রথম পর্বে জগদীশচন্দ্র বসুকে নিয়ে আমাদের সমাজে চালু থাকা অন্তত তিনটি মিথ নিয়ে আলোচনা করব। দ্বিতীয় পর্বে জগদীশ বসুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করব এবং তৃতীয় পর্বে আজকের বিশ্বে জগদীশ বসু এবং তাঁর কাজের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করব। উত্তরাধিকার, বাংলা একাডেমির সৃষ্টিশীল সাহিত্যপত্রি, জানুয়ারি-মার্চ ২০২৩ সংখ্যায় প্রকাশিত

জ্যামিতির একটি নবতর সংযোজন হলো ফ্র্যাক্টাল জ্যামিতি। এই জ্যামিতিতে সেই সব জটিল জ্যামিতিক আকার ও প্যাটার্ন নিয়ে আলোচনা করা হয় যাদের মধ্যে স্ব-সাদৃশ্যতা রয়েছে এবং পুনরাবৃত্তিক সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রবন্ধে আমরা ফ্র্যাক্টাল জ্যামিতির উদ্ভব এবং বিকাশ সম্পর্কে জানবো এবং একই সাথে আমরা এর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও জানবো। আমরা ফ্র্যাক্টাল জ্যামিতির বহুল পরিচিত দুটি উদাহরণ থেকে এর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যালোচনা করব। [বাংলা একাডেমি বিজ্ঞান পত্রিকা। নবপর্যায় বর্ষ। সংখ্যা ২। জানুয়ারি-জুন ২০২৩]

আল খাওয়ারিজমির অনেক আগে হিন্দু এবং গ্রিক গণিতবিদগণ এমন অনেক গাণিতিক সমস্যার সমাধান করেছিলেন যা আধুনিক বীজগণিতের অনুরূপ। এমনকি এরও আগে প্রাচীন মিশরীয় পুস্তকেও বীজগাণিতিক সমীকরণের মতো গাণিতিক সমস্যার সন্ধান পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০ সালের দিকে রচিত আহমোসের প্যাপিরাসে ধী=ন আকারের গাণিতিক সমীকরণের অনুরূপ গাণিতিক সমস্যার নমুনা লক্ষ্য করা যায়। মিশরীয় সভ্যতার সমসাময়িক ব্যাবিলনীয় সভ্যতায়ও এমন কিছু গাণিতিক সমস্যার সন্ধান পাওয়া যায় যাতে গাণিতিক সমীকরণ প্রচ্ছন্নভাবে বিদ্যমান। প্রাচীন গ্রিক এবং হিন্দু গণিতবিদের রচনায় রৈখিক, দ্বিঘাতী, ত্রিঘাতী কিংবা তারও বেশি মাত্রার সমীকরণের সন্ধান পাওয়া যায়। কাজেই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে আল খাওয়ারিজমি কি সত্যিই বীজগণিতের জনক?

সংগীত মানুষের জীবন ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্লেটোর দৃষ্টিতে সংগীত মানুষের আত্মা ও শরীরের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। প্লেটোর এমন দৃষ্টিভঙ্গি প্রাচীন গ্রিসের ঐতিহ্যেরই বিস্তার মাত্র। প্রাচীন গ্রিসের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকে প্লেটোর সংগীতভাবনা নিয়ে বিষদ আলোচনাই বক্ষমান প্রবন্ধের লক্ষ্য। সম্পূর্ণ আর্টিকেল পাওয়া যাবে পরম্পরা, লক্ষ্যাপার, নারায়ণগঞ্জ, ২০১৯

সারমর্ম : গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক প্রশ্নপত্র ফাঁস বাংলাদেশের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এক চরম লজ্জাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার সকল স্তরেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে চলেছে এবং বছর বছর এই প্রবণতা বেড়েই চলেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস এখন এক মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। প্রথম শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর শ্রেণি পরযন্ত কোনো স্তরেই তা রোধ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাতেও হরহামেশা প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস কেন হচ্ছে? প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানোর উপায় কী? সে সম্পর্কে গঠনমূলক আলোচনা, সমালোচনা কিংবা গবেষণালব্ধ কোনো প্রবন্ধ চোখে পড়ে না। আলোচ্য প্রবন্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণ অনুসন্ধান করা হবে এবং কী করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো সর্বগ্রাসী মহামারির হাত থেকে দেশ, জাতি এবং আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করা যায় সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে। বহুশাস্ত্রীয় সম্মিলনপত্র সরকারি হরগঙ্গা কলেজ, মুন্সিগঞ্জ কর্তৃক প্রকাশিত, প্রকাশকাল মে, ২০১৮

সারমর্ম বাংলাদেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গটি সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয় হিসেবে বিবেচিত। দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই প্রসঙ্গটি বাংলাদেশের জন্য এখন এক গভীর সংকটে রূপ নিয়েছে। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এই সংকট মোকাবেলা করতে না পারলে বাংলাদেশের জন্য তা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে এই সংকট মোকাবেলার জন্য সবার আগে এর স্বরূপটি বোঝা থাকা দরকার। আলোচ্য প্রবন্ধে গণিতের বহুল আলোচিত এবং বহুল ব্যবহৃত গেম থিউরির আলোকে রোহিঙ্গা সংকটের স্বরূপ উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়েছে এবং কী করে এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব তারও উপায় খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। মূখ্য শব্দগুচ্ছ: রোহিঙ্গা, গেম, এক খেলোয়াড়ী গেম, দ্বি খেলোয়াড়ী গেম, কোয়ালিশন গেম, সংঘাতময় গেম, সহযোগী গেম, শূন্য সমষ্টি গেম, ধ্রুবক সমষ্টি গেম।

বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর ওয়েবসাইটে একটি জনসংখ্যা ঘড়ি দেওয়া আছে। সেই ঘড়িতে গত ১৭ই মে, ২০১৫ ইং দুপুর ঠিক ১২:৩০ এ বাংলাদেশের জনসংখ্যা দেখানো হয়েছে ১৫৮,৫২১,৭১৬। এই সংখ্যাটি নিয়ে গবেষক মহলে যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। অনেকের মতে বাংলাদেশের প্রকৃত জনসংখ্যা প্রদর্শিত জনসংখ্যার চেয়ে অনেক অনেক বেশি। অনেক বেসরকারি এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের গবেষণা রিপোর্টে দেখা যায় বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২০১৪ সালেই ষোলো কোটি ছাড়িয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক এক গবেষণায় ২০১৪ সালের প্রাক্কলিত মোট জনসংখ্যা দেখানো আছে ১৬৬,২৮০,৭১২। মাত্র ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে ১৬৬,২৮০,৭১২ জন মানুষের বাস। প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১১২৭ জন মানুষের বাস। এমন ঘনবসতিপূর্ণ রাষ্ট্র পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। বলা চলে জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে এই সংখ্যা পৃথিবীর সর্বোচ্চ। তদুপরি বাংলাদেশের এই বিশাল জনগোষ্ঠীর সাথে প্রতি মিনিটে যুক্ত হচ্ছে আরও চারটি নতুন শিশু। এভাবেই প্রতি ঘণ্টায় দুই শত চল্লিশটি, দিনে পাঁচ হাজার সাতশত ষাটটি, মাসে ১৭২,৮০০ টি এবং বছরে প্রায় কুড়ি থেকে একুশ লক্ষ মানব শিশু নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। নতুন দিগন্ত। ত্রয়োদশ বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা। জুলাই -সেপ্টেম্বর, ২০১৫

এই লেখায় আইন কি, কেন এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলো কি হওয়া উচিত তার সংক্ষিপ্ত ধারণা দেয়া হয়েছে। [সম্পূর্ণ আর্টিকেল পাওয়া যাবে প্রজ্ঞা, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক),মুন্সীগঞ্জ, ১ জুন, ২০১৪ সংখ্যা]

দুর্নীতিবাজদের ধরিবার উদ্দেশ্যে কিংবা দেশ হইতে দুর্নীতি খেদাইবার জন্যে ২০০৪ সালে বাংলাদেশে একটি কমিশন গঠন করা হইয়াছে। প্রথম দিকে ইহার নাম শোনা যাইত স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন। এখন আর স্বাধীন কথাটি শোনা যায় না। কাগজে-কলমে ইহার নাম রাখা হইয়াছে দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্ষেপে দুদক। ইংরেজিতে Anti Corruption Commission বা ACC। এই নামকরণ নিয়া, বিশেষ করিয়া বাংলা নামটি সম্পর্কে, অনেক দিন ধরিয়া কিছু লিখিব লিখিব করিয়া লিখা হইয়া উঠিল না। অবশেষে সুযোগ পাইয়া এই বিষয়ে কিছু লিখিবার লোভ সামলাইতে পারিলাম না।

বিদ্রোহী কবিতা পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলোড়ন সৃষ্টিকারী, উদ্দীপক কবিতা। বিদ্রোহী কবিতার মাধ্যমে কবি নিজেকে ধুলার পৃথিবী থেকে আকাশের অসীম উচ্চতায় উঠিয়েছেন। এর মাধ্যমে কবি তাঁর জাত চিনিয়েছেন। তাঁর অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত নির্ধারণ করেছেন। বিদ্রোহী কবিতা তাই পৃথিবীর অনন্য একটি কবিতা। এটি অনন্য ভাবে, ভাষায়, ছন্দে, প্রকাশে, কলেবরে, বৈশিষ্ট্যে। তবে আর সব গুণ ছাপিয়ে বিদ্রোহী কবিতাটি পৃথিবীতে অদ্বিতীয় হয়ে উঠেছে এর পৈৗরাণিক চরিত্রের সফল রূপায়নের মাধ্যমে। কেবল স্ব-জাতির পৌরাণিক চরিত্রই নয়, বরং ভিন্ন জাতির, ভিন্ন সংস্কৃতির পৌরাণিক চরিত্রও এমন সফলভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে তা নিতান্তই বিরল। বিদ্রোহী কবিতার পৌারাণিক চরিত্রের প্রসঙ্গালোচনাই বর্তমান প্রবন্ধের মূল বিষয়।

একটি দেশের শিক্ষানীতি সে দেশের শিক্ষা দর্শনও বটে। শিক্ষানীতির মাধ্যমে কেবল একটি দেশের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থার ধারণা পাওয়া যায় তাই নয় বরং এর মাধ্যমে একটি দেশের ভবিষ্যত কিংবা কাক্সিক্ষত লক্ষ্য সম্পর্কেও ধারণা করা যায়। সেই হিসেবে শিক্ষানীতি একটি দেশের ভবিষত নির্ধারণের একটি অনন্য রোড ম্যাপও। আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোটীয় সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবার পর অত্যন্ত তোড়জোড়ের সাথে শিক্ষানীতি প্রণয়নের উদ্যেগ নেয় এবং ২০১০ সালে একটি নীতি চুড়ান্ত করে। বলার অপেক্ষা রাখেনা এটি বর্তমান সরকারের অত্যন্ত আলোচিত নীতিসমূহের একটি। এ নীতি প্রণয়নে এবং এতদসম্পর্কে যত অধিক আলোচনা কিংবা সমালোচনা হয়েছে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম থেকে এ পর্যন্ত আর কোন নীতি নিয়েই এত আলোচনা-সমালোচনা হয় নি। এটা নিঃসন্দেহে এ নীতির সবচেয়ে আলোকিত দিক, কিংবা বলা যায় এর সবচেয়ে সফলতম দিক। কিন্তু এত অধিক আলোচনার পরেও যে শিক্ষানীতিটি আমরা পেলাম তা অত্যন্ত সাধারণ কিংবা বলা যায় কিছুটা নিম্নমান সম্পন্নই। শিক্ষানীতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অজ্ঞতা এবং দূরদর্শীতার অভাব কিংবা দলীয় আনুগত্যশীলতা ও সংকীর্ণতার প্রাবল্যই এর প্রধান কারণ বলে মনে হয়। সবচেয়ে বড় কথা হল সমগ্র শিক্ষানীতিতে সংশ্লিষ্টদের দার্শনিক ভিত্তিস্তরের নিম্নমুখীতা অত্যন�

গত মঙ্গলবার সারা দেশে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থায় মাধ্যমিক স্তরের ফলাফল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ ফলাফল নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সকলেরই যথেষ্ট আগ্রহ দেখা যায়। [০২ জুন ২০০৯, দৈনিক সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত। ]

‘আমাদের দেশে যে সকল কারণে পরীক্ষার ফলাফল ‘ভালো’ হয়ে থাকে সেগুলোর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল ১। সরকারি আকাংখা। ২। বোর্ডের ইচ্ছা। ৩। প্রশ্নপত্র প্রণয়নে সংশ্লিষ্টদের অজ্ঞতা ৪। উত্তরপত্র মূল্যায়নে শৈথিল্য ৬। বোর্ড ‘কর্মকর্তা’ এবং এক শ্রেণির ‘শিক্ষক’দের ‘অসৎ’ যোগাযোগ ৭। প্রাইভেট এবং গাইড বইয়ের ব্যাপক বিস্তৃতি এবং ৮। ব্যবহারিক বিষয়সমূহের সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ শিক্ষকের সিন্ডিকেশন। এ সাতটি কারণ মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার ‘অন্যায্য’ রেজাল্ট-বুমের জন্য দায়ী। শিক্ষার সাথে খুব অল্পদিন সংশ্লিষ্ট এমন ব্যক্তিও এ কথার সত্যতা মেনে নেবেন। একারণে পাশের এ উর্ধগতি সত্ত্বেও শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে শত প্রশ্ন।’ [০২ জুন ২০০৯, দৈনিক সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত]

বংলার ইতিহাসে যুগে যুগে যে সকল মহান পুরুষ মানব কল্যাণে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন মহাত্মা অশ্বিনীকুমার দত্ত তাঁদের মধ্যে অন্যতম। মহাত্মা অশ্বিনীকুমার ছিলেন একাধারে একজন সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাব্রতী, রাজনীতিবিদ, ধর্ম সংস্কারক, সাহিত্যিক, আইনজীবি, দার্শনিক। তাঁর পরহিতব্রত, অসাম্প্রাদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি, উদার মানসিকতা এবং রাজনৈতিক সচেতনতা তাঁকে কেবল দক্ষিণ বাংলারই নয় বরং তৎকালীন অখ- বাংলার অবিসংবাদী নেতারূপে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। তিনি একদিকে স্বদেশের স্বাধিকারের জন্য আন্দোলনে অগ্রণী সেনানীর ভূমিকা পালন করেছিলেন অন্যদিকে তাঁর সমগ্র চিন্তা, শক্তি ও সামর্থ দিয়ে স্বজাতীর উন্নতির জন্য নিরলস কাজ করে গেছেন। স্বদেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধ, মানুষের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ, ঈশ্বরের প্রতি অবিচল আস্থাই ছিল অশ্বিনীকুমারের বৈশিষ্ট।

উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সকল পরীক্ষকেরই দর্শনগত ধারণার ঐক্যটি লক্ষ্যণীয়। বিদ্যমান এবং দৃশ্যমান এ দর্শনটি হল, ‘পরীক্ষক পরীক্ষার্থীদের নাম্বার দিয়ে থাকেন’। অর্থাৎ, পরীক্ষক ‘দাতা’ এবং পরীক্ষার্থী ‘গ্রহীতা’। পরীক্ষার্থীর প্রাপ্ত নাম্বার তার অর্জন নয়, অনেকটা পরীক্ষকের ‘দয়া’ বা ‘মর্জি’। এ কারণে পরীক্ষকবৃন্দ সাধারণত যোগত্তর পদ্ধতিতে (additive method) উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে থাকেন। যেমন, ‘ষড়ঋতু’ রচনাটি পরীক্ষকের মোটামুটি পছন্দ হয়েছে ১০ এ ৫ দেয়া যায়। লেখাটি ০৭-০৭-২০০৭ দৈনিক সমকালে প্রকাশিত হয়েছে।

স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য এ মুহহৃর্তে তিনটি কাজ করতে হবে। প্রথমত, স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ তিরিশ লাখ মুক্তিযোদ্ধার নাম-ঠিকানা প্রকাশ করতে হবে এবং তাদের জাতীয় বীরের মর্যাদা দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, স্বাধীনতা যুদ্ধে যেসব মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়েছেন সেসব যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরি করতে হবে। তাদের মধ্যে যাঁরা এখনো বেঁচে আছেন তাদের পূর্ণাঙ্গ সামাজিক মর্যাদা দিতে হবে। যাঁদের প্রয়োজন তাদের পর্যাপ্ত আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। এবং তৃতীয়ত, ঘৃণ্য রাজাকার, আল বদর, আল শামসের সদস্যদের জেলা এবং উপজেলাভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। [২৫ মার্চ ২০০৭ দৈনিক সমকালে প্রকাশিত। ]

গণিতভীতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল বিদ্যমান পরীক্ষা বা মেধা যাচাই পদ্ধতি। পরীক্ষার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান ও মেধা যাচাই করা হয়। আমাদের দেশে প্রশ্নকর্তারা সাধারণত গণিত বইয়ের সবচেয়ে জটিল ও দূর্বোধ্য অংকগুলোকে বাছাই করেন পরীক্ষার জন্য। যেমন ধরা যাক একটি অধ্যায়ে চল্লিশটি অংক আছে। এর মধ্যে চার থেকে পাঁচটি অঙ্ক আছে অপেক্ষাকৃত জটিল। প্রশ্নকর্তারা পরীক্ষার জন্য ঐ জটিল অঙ্কগুলোকেই বাছাই করে থাকেন এবং বছরের পর বছর ঐ অঙ্কগুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নির্বাচন করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ সালে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত।

এই প্রবন্ধে সংখ্যার আবিষ্কারের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন সভ্যতায় সংখ্যার ধরণ, প্রকৃতি, সংখ্যা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে এই প্রবন্ধে। প্রকাশকাল ১ জানুয়ারি ২০০৭

মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর একজন শিক্ষার্থীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর। মাধ্যমিক শিক্ষা মুলতঃ শিক্ষার্থীর মেধা ও আগ্রহের সাথে সুপ্ত প্রতিভার সমন্বয় ঘটিয়ে নিজেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রস্তুত করে। মাধ্যমিক শিক্ষা উচ্চ শিক্ষার ভিত্তি হিসাবে কাজ করে। মাধ্যমিক শিক্ষার ভিত্তি মজবুত না হলে একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে উচ্চ শিক্ষা অর্জন দুরূহ হয়ে পড়ে। ১৫ নভেম্বর ২০০৫ দৈনিক সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত।

শিক্ষকতার মত মহান পেশাকে সাইনবোর্ড হিসাবে ব্যবহার করে কেউবা আবার কনসালটেন্সি কিংবা বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থায় উচ্চ বেতনে পার্ট টাইম কাজ করেন। বাস্তবে ওটাই তাদের মূল কাজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোটাই তাদের পার্ট টাইম হয়ে দাঁড়ায় (মুষ্টিমেয় শিক্ষক যে এর ব্যতিক্রম নেই তা নয়, তাঁদের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনও টিকে আছে কোন রকমে)। তাই উচ্চ শিক্ষার উচ্চ মানের জন্য শিক্ষকদের যোগ্যতা, মেধা, আন্তরিকতা, সততা ও দায়িত্বশীল আচরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৫ নভেম্বর ২০০৫ ইং দৈনিক সমকালে প্রকাশিত।

শিক্ষা একটি দেশের জাতীয় উন্নয়নের পূর্বশর্ত। শিক্ষা ছাড়া একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষা কেবল ব্যক্তির পূর্ণ বিকাশই ঘটায় না বরং শিক্ষা ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের সুনাগরিকে পরিণত করে। তাই শিক্ষা মানব জীবনের মৌলিক অধিকারের স্থান দখল করে আছে। একজন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের যেমন প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন শিক্ষার। তাই শিক্ষা, বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষা আন্তর্জাতিকভাবে মানুষের জন্মগতভাবে মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনে মানবাধিকার সংক্রান্ত সার্বজনীন ঘোষণায় উল্লেখ করা হয় ”শিক্ষায় সকলের অধিকার রয়েছে।

‘তাই প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের মানের গুনোগত পরিবর্তনের জন্য বিদ্যমান বাংলা ও ইংরেজী বিষয়দুটির বিষয়বস্তু সুসৃংখল ও সুসংবদ্ধ করতে হবে যাতে একজন শিশু প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা শেষে যথার্থ অর্থেই বলা, শোনা, পড়া ও লেখা এ চারটি যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান ও পরিবেশ পরিচিতি সমাজ এ বিষয়গুলো সহজ, সাবলীল, বাস্তবসম্মত, আধুনিক এবং প্রমাণ-স্বাপেক্ষ হতে হবে। এর মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে একদিকে যেমন বিজ্ঞান মনস্ক করে তুলতে হবে অন্যদিকে বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ সম্পর্কে শিক্ষার্থীকে অবহিত করতে হবে। তৃতীয় শ্রেণী থেকে বাধ্যতামূলক ধর্ম শিক্ষার পরিবর্তে নীতিশিক্ষার প্রবর্তন করতে হবে। নীতিশিক্ষা আর ধর্ম শিক্ষা এক নয়। ধর্মীয় শিক্ষা এবং বিজ্ঞান শিক্ষা পরস্পরবিরোধী। ইহা শিক্ষার্থীর মানবিক ও সামাজিক বিকাশের পথে অন্তরায়ও। ধর্মীয় শিক্ষা মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশের পরিবর্তে মনের বন্ধাত্ব অবস্থার সৃষ্টি করে। নীতিশিক্ষার মূল লক্ষ্য হবে প্রতিটি শিশুর মধ্যে নীতিবোধের একটি সাধারণ ভিত্তি গ্রোথিত করা। মানুষের ভিতরের মনুষত্বকে জাগিয়ে তোলা। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ ভিত্তিক বৈষম্যের পরিবর্তে মানুষে মানুষে সহযোগিতা, সহমর্মিতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করা। শিশুমনের বিকাশ, মূল্যবোধ সৃষ্টি ও মানবীয় গুণাবলীর সমন্বয় ঘটিয়ে মানুষকে ’মানুষে

একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা বর্তমান সময়ের একটি বহুল আলোচিত বিষয়। আগামী শিক্ষা বছর থেকে অর্থাৎ ২০০৬ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে দেশে বর্তমানে বিদ্যমান বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা এ তিনটি বিভাগের পরিবর্তে একটি সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায় নানা মতামত, আলোচনা, সমালোচনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেউ কেউ মাধ্যমিক পর্যায়ে এ সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা বলে ভুল করছেন। ফলে তাদের অনেকেই মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রস্তাবিত সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলতে গিয়ে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। তাই একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা কি এ বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া জরুরী বলে মনে করি।

‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পর্যন্ত প্রত্যেককে যাঁর যাঁর অবস্থানে থেকে শিক্ষার্থীদের গণিতের প্রতি আগ্রহ ধরে রাখতে হবে। এ পর্যায়ে সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। কারন এ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মন থাকে কোমল। এ পর্যায়ে একবার শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিতের প্রতি ভীতি তৈরী হয়ে গেলে তাকে আবার গণিতমুখী করা খুবই কষ্টসাধ্য। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের ভূমিকা কোন অংশেই কম নয় বরং আরো ব্যপক। কারণ এ পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাই পরবর্তীতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহে শিক্ষাদান করে থাকেন। গণিতের প্রতি তাদের দখল এবং আগ্রহের উপর নির্ভর করে বিদ্যালয়ে তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি। সত্যিকার অর্থে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা, শিক্ষাদান পদ্ধতি, বিষয়ের প্রতি আগ্রহ এর প্রতিটি একটির সাথে অন্যটি সম্পর্কযুক্ত। এর যেকোন একটি পর্যায়ে যদি কোন একটি ব্যবস্থা ঠিক ভাবে কাজ না করে তবে এর প্রভাব অন্য সকল পর্যায়ে পরে। এ চক্র ভাঙ্গার জন্য শিক্ষকদেরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এরজন্য একজন শিক্ষককে অবশ্যই বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান থাকতে হবে। শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের মান অনুযায়ী গণিত বিষয়ের প্রয়োজনীয়তা বাস্তবভিত্তিক উদাহরণের মাধ্যমে বুঝাতে হবে�